চট্টগ্রাম, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত একটি বন্দরনগরী এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। বিভাগের প্রশাসনিক কেন্দ্র এবং বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর। শহরের ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য এটিকে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছে। শহরটি কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত, যা চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই নদী দিয়ে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর পরিচালিত হয়, যা দেশের রপ্তানি ও আমদানি কার্যক্রমের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। দেশের বেশিরভাগ বাণিজ্যিক চালান চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যা এটিকে একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্রে পরিণত করেছে।
একটি ইতিহাসবাহী শহর, যেখানে মুসলিম, হিন্দু এবং বৌদ্ধ সংস্কৃতির মিলন ঘটে। প্রাচীনকালে এটি আরাকান রাজ্যের অংশ ছিল এবং পরবর্তীতে মুঘল শাসন এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের অধীনে আসে। এই শহর মুক্তিযুদ্ধের সাথেও গভীরভাবে জড়িত। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ এখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার পর রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল।
শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, ফয়’স লেক, ভাটিয়ারি হ্রদ, এবং পাহাড়ঘেরা বনাঞ্চল চট্টগ্রামের পর্যটন শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানকার ঐতিহ্যবাহী মেজবানের খাবার, পাহাড়ি রাস্তা, এবং মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে। চট্টগ্রাম দেশের শিল্প ও বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে অবিচল ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশের রপ্তানি খাতের একটি বড় অংশ এখানকার তৈরি পোশাক শিল্প ও জাহাজ নির্মাণ কারখানার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।