দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি (সিসিসিআই) এবং জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (JETRO)’র মধ্যে বিজনেস টু বিজনেস মিটিং ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ’র সভাপতিত্বে সহ-সভাপতি রাইসা মাহবুব, জেটরো’র ঢাকাস্থ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ ইউজি অ্যান্ডো (Mr. Yuji Ando), চেম্বার পরিচালকবৃন্দ মাহফুজুল হক শাহ, মোহাম্মদ আকতার পারভেজ এবং ওমর মুক্তাদির বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যদের মধ্যে চেম্বার পরিচালক মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম ও চেম্বার সেক্রেটারী ইনচার্জ প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
চিটাগাং চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন-জাপান বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু। দেশের বর্তমান অবকাঠামো উন্নয়নে বড় বিনিয়োগ রয়েছে জাপানের। এর মধ্যে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ, ঢাকা মেট্রোরেল এবং শাহজালাল বিমান বন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল অন্যতম। জাপানী বিনিয়োগকারীদের সকল ধরনের সহায়তা করতে চিটাগাং চেম্বার জাপান ডেস্ক চালু করেছে। চিটাগাং চেম্বার আগামী বছর ‘বে অব বেঙ্গল গ্রোথ সামিট’ আয়োজনের পরিকল্পনা নিচ্ছে এবং চিটাগাং চেম্বার থেকে একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল জাপান সফর করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি গত ৫১ বছর যাবৎ জাপানের অব্যাহত উন্নয়ন সহযোগিতাকে আরো প্রসারিত করার লক্ষ্যে জাপানে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের অনুরোধ জানান। এই দক্ষ জনশক্তি যাতে জাপানের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে পারে সেজন্য কারিগরি ইনস্টিটিউটসমূহের সাথে চুক্তির মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে সেক্টরভিত্তিক দক্ষ জনশক্তি তৈরীর আহবান জানান চেম্বার সভাপতি।
জেটরো’র কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ইউজি আন্দো শুরুতেই চিটাগাং চেম্বারের নতুন নেতৃত্বকে অভিনন্দন জানান। বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বে জাপানের বিভিন্ন বিনিয়োগ ও জাপানী কোম্পানীর বিনিয়োগের তথ্যচিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন-নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজারে ৪০টি বিদেশী প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে ৫টি কোম্পানীর সঙ্গে ভূমি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে স্থানীয় বাজারের জন্য পণ্য তৈরী করা হবে। চট্টগ্রামের ইপিজেডেই প্রথম জাপানী বিনিয়োগে কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। জাপানী বিনিয়োগকারীরা সাপ্লাই চেইন ঠিক রেখে শিল্প স্থাপন করে। তাই তারা চট্টগ্রামের মিরসরাই এবং মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরকে কেন্দ্র করে গড়ে তুলতে চায় রপ্তানিমূখী বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান। তিনি আরো বলেন-জাপানী বিনিয়োগকারীরা আশা করেন ২০২৫ সালের মধ্যে জাপান-বাংলাদেশ ইকোনমিক পার্টনারশীপ এগ্রিমেন্ট (ইপিএ) সম্পন্ন হবে। এছাড়া কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স প্রসিডিউর এর জটিলতা সহজতর করা গেলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আরো বেশী আগ্রহী হবে। চেম্বার সভাপতির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আগামী বছর জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘বে অব বেঙ্গল গ্রোথ সামিট’ আয়োজনে সহযোগিতার কথা জানান ইউজি আন্দো।
চেম্বার সহ-সভাপতি রাইসা মাহবুব বলেন-কোয়ালিটি মেডিসিন উৎপাদনের লক্ষ্যে ফার্মাসিউটিক্যালস সেক্টরে যৌথ বিনিয়োগে শিল্প স্থাপনের জন্য চট্টগ্রামে জাপানী বিনিয়োগকারীদের আহবান জানান। তিনি দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারের সহযোগী হিসেবে সকল ধরণের সেবা দিতে চিটাগাং চেম্বার প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান।
চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ পর্যটন খাতে জাপানের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের প্রত্যাশা করেন। চেম্বার পরিচালক মোহাম্মদ আকতার পারভেজ অটোমোবাইল সেক্টরে অর্জিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং (ওইএম) মোটর পার্টস উৎপাদনে জাপানের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহবান জানান।