জাতীয় নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে রাজনীতিবিদদেরকেই চূড়ান্ত ফয়সালা ও সমঝোতায় আসতে হবে

বাংলাদেশ ইসলামী মহিলা ফ্রন্টের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্মেলন ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে নগরীর বহদ্দারহাটস্থ আর বি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামী মহিলা ফ্রন্ট চট্টগ্রাম বিভাগীয় আহবায়ক হাজ্জা কুসুম আকতার ভান্ডারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মতিন। তিনি বলেন, আজকের গভীর রাজনৈতিক সংকটের জন্য দায়ী বড় দুই দল ও জোট। গণমুখী রাজনীতির চর্চার বিপরীতে সংঘাত হানাহানির রাজনীতি চলতে থাকায় দেশবাসী আজ শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। সবকিছুতে এখন জনগণের রক্তচুষা সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত অসাধু ব্যবসায়ীরা আজ সরকারের ভেতরে ঢুকে কলকাঠি নাড়ছে। মানুষ আজ অধিকারহারা, বিপন্ন ও অসহায়। দ্রব্যমূল্যের চাপে সাধারণ জনগণ আজ চিড়েচ্যাপ্টা। অথচ সরকার জনদুর্ভোগ নিরসনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নির্বিকার। এম এ মতিন বলেন, জাতীয় নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে, তা নিয়ে দুই দলের সংঘাতের রাজনীতি দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জাতীয় নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে বিরোধ ও সংঘাত রাজনীতিবিদদেরই সৃষ্টি। তাই কীভাবে জাতীয় নির্বাচন হবে এই প্রশ্নে রাজনীতিবিদদেরকেই শীঘ্রই চূড়ান্ত ফয়সালা ও রাজনৈতিক সমঝোতায় আসতে হবে। না হয় রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হয়ে দেশের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে।

তিনি নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করে এবং ঢেলে সাজিয়ে সুষ্ঠু, পক্ষপাতমুক্ত ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে ইসি ও সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। মুখ্য আলোচক ছিলেন ইসলামী ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা স উ ম আব্দুস সামাদ। প্রধান অতিথি এম এ মতিন বলেন, সুন্নি মতাদর্শের আলোকে গণমুখী ইনসাফভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ইসলামী ফ্রন্ট রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় রয়েছে। নারী জাতি মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। তাই আদর্শ পরিবার গঠনে ও জাতি গঠনে নারীদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে হবে। নারীদেরকেও আজ রাজনীতি সচেতন হতে হবে। সুন্নিয়তের দাওয়াত দেশের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে নারীদের অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি। মুখ্য আলোচক মাওলানা স উ ম আব্দুস সামাদ বলেন, আমাদের প্রতিবেশী ভারতসহ সকল সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন। তাই স্বাধীন শক্তিশালী নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারকে আন্তরিক ও দায়িত্বশীল হতে হবে। ঈমান আক্বিদা মজবুত করে সুন্নিয়তের আলোকে পরিবার গঠনে প্রতিটি নারীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। সম্মেলনে অতিথি ও আলোচক ছিলেন ইসলামী ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য এম সোলাইমান ফরিদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য পীরে তরিকত আল্লামা গোলামুর রহমান আশরফ শাহ, মাওলানা রেজাউল করিম তালুকদার, অধ্যক্ষ মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা এম এ মাবুদ, মাস্টার মুহাম্মদ আবুল হোসাইন, মুহাম্মদ এনামুল হক ছিদ্দিকী, পীরে তরিকত মাওলানা সৈয়দ এয়ার মুহাম্মদ পেয়ারু, নাছির উদ্দিন মাহমুদ, অধ্যাপক মাওলানা মীর আবদুর রহিম মুনিরী, মাওলানা গিয়াস উদ্দিন নেজামী, মুহাম্মদ আলী হোসাইন, মহিউল আলম চৌধুরী, মাওলানা সৈয়দুল হক সাঈদ কাজেমী, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা কাযী মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, সাইফুদ্দিন খালেদ চৌধুরী, অধ্যক্ষ ডিআইএম জাহাঙ্গীর আলম, আলমগীর ইসলাম বঈদী, আবদুল করিম সেলিম। ইসলামী মহিলা ফ্রন্টের নানা শাখার নেত্রীবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহনাজ মুন্নি, শাহনাজ আকতার ফেরদৌসি, জাহেদা আকতার, রুবি আকতার, জাফরিন আকতার, নাসিমা আকতার, সানজিদা, মুক্তা, তকিয়া জাহানারা, বানু, মাজেদা, কোহিনুর, ফৌজিয়া, বদরুন্নেছা, হালিমা, ডা: জেসমীন, শিউলি কানিজ, সাগেরা, আমেনা বেগম, বেবী আকতার, রোজি আকতার, পায়েল, তাহমিনা, নাসিমা আকতার, জাহানারা, রিজিয়া, ইয়াসমিন মানু, শহরবানু, ফারিহা, নাজমা, রহিমা, আচার বেগম, আনু আকতার, হুমায়রা, সারাবান, আরিফা সুলতানা, জেসমিন, জ্যোৎসনা আকতার, হাবিবা বেগম, রুবি আকতার প্রমুখ। ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব মাওলানা স উ ম আবদুস সামাদ ইসলামী মহিলা ফ্রন্টের চট্টগ্রাম বিভাগীয়, দক্ষিণ জেলা ও মহানগর দক্ষিণের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। শীঘ্রই অন্যান্য জেলা ও উপজেলা কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে তিনি জানান। ইসলামী মহিলা ফ্রন্টের হাজারো নারীনেত্রী ও কর্মী সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.