ইসরাইল ও লেবাননের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা তাদের প্রতিরোধ শক্তি দিয়ে ইসরাইলি সেনাদের তীব্র চাপে রেখেছে। গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরাইলের সেনারা লেবাননের স্থল সীমান্তে ঢোকার চেষ্টা করলেও তারা বিশেষ কোনো অগ্রগতি করতে পারছে না। মাত্র ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে হিজবুল্লাহ চারবার ইসরাইলি সেনাদের উপর হামলা করেছে, যা ইসরাইলি সেনাদের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশে সেনারা লেবাননে প্রবেশ করেছে, কিন্তু তারা সেখানে বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছে। হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা তাদের দক্ষতায় ইসরাইলি সেনাদের চারদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে। একইসাথে হিজবুল্লাহ ঘরে থেকেও প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইসরাইলি সীমান্তে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা ইসরাইলের ইরন, কাফর জালাদি, রামিম ব্যারাক এবং মিসগাভ অঞ্চলে একযোগে হামলা চালিয়েছে।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) লেবাননের প্রবেশদ্বার খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হচ্ছে, কারণ হিজবুল্লাহ ফ্রন্টলাইনে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এই প্রতিরোধে নেতৃত্ব দিচ্ছে হিজবুল্লাহর প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ রাদওয়ান ফোর্স, যাদের যুদ্ধের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। উত্তরের ইসরাইলকে রকেট আক্রমণের মাধ্যমে চেপে ধরেছে হিজবুল্লাহ, যার মধ্যে মিসগাব এবং হানিদা অঞ্চলে তাদের শক্তিশালী আক্রমণ ছিল উল্লেখযোগ্য।
হিজবুল্লাহর প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইসরাইলি সেনাদের লক্ষ করে ফালাক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে, যা ইসরাইলের সেনাদের আরও চাপে ফেলেছে। হিজবুল্লাহর গণমাধ্যম বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আফিফ জানিয়েছেন, “এটা কেবল প্রথম ধাপ। আমাদের কাছে যথেষ্ট যোদ্ধা, অস্ত্র এবং গোলাবারুদ আছে। এমনকি আমরা ইসরাইলের বিমান শক্তির বিরুদ্ধেও প্রস্তুত।”
ব্রাসেলস ভিত্তিক সামরিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এলিজা জেনারেল ম্যাগনিয়ার বলেছেন, “গাজার প্রতিরোধের তুলনায় দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর প্রতিরোধ অনেক বেশি শক্তিশালী। গাজার ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা তাদের নিজস্ব অস্ত্র ব্যবহার করছে, কিন্তু হিজবুল্লাহর কাছে রয়েছে উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র।” তিনি আল-জাজিরাকে আরও বলেন, “আমি মনে করি, ইসরাইলিরা এখন বুঝতে পেরেছে যে, হিজবুল্লাহ হামাসের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ।”
হিজবুল্লাহর এই প্রতিরোধ ইসরাইলকে একটি দীর্ঘস্থায়ী সংকটে ফেলছে। ইসরাইলি সেনারা লেবাননের ভেতরে প্রবেশ করতে পারছে না, এবং হিজবুল্লাহর প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইসরাইলি স্থাপনা ও সেনাদের ওপর একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।
এই অবস্থায় হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের দক্ষতা ও প্রস্তুতির কারণে ইসরাইল একটি বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। হিজবুল্লাহ কেবল লেবাননেই নয়, পুরো অঞ্চলে তাদের শক্তিশালী প্রতিরোধ বাহিনী হিসেবে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করছে।