বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি

আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে দেশের অর্থনীতি একটি সংকটময় অবস্থায় পৌঁছেছে। এই সময়ে প্রায় ১৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে, যা ১৫০ বিলিয়ন ডলারের সমান। একইসাথে, দেশী ও বিদেশী উৎস থেকে ১ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেওয়া হয়েছে। সরকারের অতিরিক্ত ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপানোর ফলে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি, ডলারের সংকট এবং অর্থনীতির ভঙ্গুর অবস্থা দেখা দিয়েছে।

বর্তমানে, একজন নাগরিক হিসেবে যে ৯০০০ টাকা বেতন পাই, সংসার চালানো অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে উঠেছে। কোনো দেশের সরকার ইচ্ছেমত টাকা ছাপাতে পারে না। অতিরিক্ত টাকা ছাপানোর ফলে টাকার মান কমে যায় এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ে, যা অর্থনীতির পরিভাষায় “মুদ্রাস্ফীতি” হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের বাজারে বর্তমান দাম বৃদ্ধির মূল কারণ আওয়ামী লীগ সরকারের অজ্ঞাতসারে পরিচালিত মুদ্রানীতি।

২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার সময় সরকারের ঋণ ছিল মাত্র ২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। তবে এখন সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকায়, যা আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের ফলস্বরূপ ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ, মোট ঋণের ৮৫ শতাংশই আওয়ামী লীগের শাসনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।

জিএফআই এর তথ্যমতে, শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসন আমলে অন্তত ১৪৯২০ কোটি বা ১৪৯২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকায় পরিণত হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, বিরোধী দলের দাবি অনুযায়ী, রিজার্ভের টাকা গেল কোথায়?

২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বাধিক ৪৮০৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছালেও আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির সময় এটি মাত্র ২০৪৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ইতোমধ্যে একটি টাস্ক ফোর্স পুনর্গঠন করেছেন, যার লক্ষ্য হচ্ছে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যে এই প্রচেষ্টায় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, বড় ঋণ খেলাফীদের দ্রুত চিহ্নিত করে তাদের সম্পদ বিক্রি করে টাকা উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য আইনগত এবং আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা নেওয়া হবে।

সরকারের নীতিগুলির পুনর্বিবেচনা এবং অর্থনীতির জন্য স্থিতিশীল পরিকল্পনা গ্রহণের সময় এসেছে, যাতে সাধারণ মানুষের জন্য জীবনযাত্রা সহজতর হয়।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন