বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “ক্ষমতায় বসে দেশের মালিক সেজে গেলে যে ভয়াবহ পরিণতি হয়, তা আমরা দেখেছি। জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলে যে শাস্তি ভোগ করতে হয়, তা আমাদের সবার জন্য শিক্ষা হওয়া উচিত। যদি আমরা এই শিক্ষা গ্রহণ করি, তবে ভবিষ্যতে আর কোনো স্বৈরাচারী শাসকের জন্ম হবে না।” শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে গাজীপুর জেলার রাজবাড়ি মাঠে আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমির ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, “জনগণের অর্থে কেনা বুলেট দিয়ে যারা জনগণের বুকে গুলি চালানোর সাহস করে, এমন সন্ত্রাসী সরকার আর আমরা দেখতে চাই না। আমরা চাই একটি বৈষম্যহীন ও শোষণমুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে। এ জন্য দেশের ১৮ কোটি মানুষকে একত্রিত করতে হবে। আমরা দল বা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিকে আর বিভক্ত হতে দেব না। কে কোন ধর্ম পালন করবে বা কোন রাজনৈতিক দল সমর্থন করবে, তা একান্তই তার ব্যক্তিগত পছন্দ।”
দেশ ও জনগণের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “দেশে ও বিদেশে আমাদের জানাতে হবে যে, জাতীয় স্বার্থে আমরা বিভাজিত নই। এমন ঐক্যবদ্ধ জাতিকে আর কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।”
শহীদ পরিবারের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমির বলেন, “আমরা আপনাদের পাশে এসেছি কোনো অনুগ্রহ করতে নয়, বরং আপনাদের দোয়া নিয়ে আমাদের হৃদয়কে শীতল করতে। আপনারা আমাদের গর্বের উৎস, মর্যাদার প্রতীক, আমাদের সম্মানের অধিকারী। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, আপনাদের যথাযথ স্বীকৃতি দেওয়া হোক। যেন ভবিষ্যৎ নাগরিকেরা পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে জানতে পারে, তাদের আবু সাঈদেরা কে ছিলেন।”
কারখানা শ্রমিকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “একটি বিশেষ গোষ্ঠী মালিক ও শ্রমিকদের সংঘর্ষে জড়িয়ে ফেলে। তারা সমাজের শত্রু, যারা শিল্প ধ্বংস করতে চায়। তারা শ্রমিকদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে রাস্তায় নামায়, শ্রমিকদের প্রাণ হারাতে হয়, অথচ সুবিধা ভোগ করে ওই গোষ্ঠী। কিছু মালিকও আছেন, যারা শ্রমিকের শুধু ঘামই নয়, রক্তও চুষে নিতে চান। যারা শিল্প বাঁচাতে চায়, তাদের বাঁচতে দিন। আপনি তাদের সম্মান করবেন, তারা তাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা আপনাকে নিবেদন করবে।”
জামায়াতে ইসলামী গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি মুহাম্মদ জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দলের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ। এছাড়াও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য খলিলুর রহমান, ঢাকা উত্তর অঞ্চলের সদস্য আবুল হাসেম খান, দেলাওয়ার হোসেন, গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমির জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির মুহাম্মদ খায়রুল হাসান, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাউদ্দিন আইউবী প্রমুখ।