Site icon দৈনিক পূর্বদেশ | বাংলা নিউজ পেপার

সেভেন সিস্টার ভাঙ্গনের সুর

মোদির বি/প/দ, বি/দ্রো/হীদের সঙ্গে ছাত্র আন্দোলনও তুঙ্গে

ভারতের মণিপুরে সহিংস সংঘর্ষের কারণে পরিস্থিতি আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত কয়েকদিনে গোলাগুলি বোমা বিস্ফোরণ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু এবং মণিপুর রাইফেলস অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র লুটের চেষ্টা হয়েছে। তবে এর চেয়েও চাঞ্চল্যকর ঘটনাও ঘটে গেছে। মণিপুরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাজভবন এবং থাউবালের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। তারা ডিসি অফিসে ভারতের জাতীয় পতাকা নামিয়ে সাত রঙা একটি পতাকা উত্তোলন করেছে। এই পতাকাটি কাংলিপাক বা সালাইটারেট পতাকা হিসেবে পরিচিত যা প্রাচীন মেতি জাতিগোষ্ঠীর সাতটি বংশের প্রতিনিধিত্ব করে।

শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি ক্ষোভ থেকে। তারা অভিযোগ করেছে যে সরকার মণিপুরের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা মনোজ সিং এর অপসারণ করেছে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যের শান্তি রক্ষার জন্য অধিক ক্ষমতা প্রদান করার আহ্বান জানিয়েছে। বিক্ষোবের মধ্যে শিক্ষার্থীরা মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং এর বাসভবনে হামলার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিরাপত্তা বাহিনীর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠি চার্জ করে। পরে শিক্ষার্থীরা রাজভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

বিক্ষোবকারীদের সরকারের পতাকা নামিয়ে সাতরঙ্গা পতাকা উত্তোলনের আরেকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। থাওবা ডেপুটি কমিশনার সুভাষ সিং জানিয়েছেন এই ঘটনা মূল অফিস ভবনের ছাদে ঘটেনি বরং প্রধান ফটকে ঘটেছে। সাধারণত প্রধান ফটকে পতাকা উত্তোলন করা হয় না। মূল অফিস ভবনে তেরঙ্গা পতাকা ওড়ানো হয়। এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই শিক্ষার্থীদের কার্যকলাপকে সমর্থন করেছেন আবার অনেকেই করেছেন বিরোধিতা।

মণিপুরে চলমান সংকটের মাঝে এই বিক্ষোভ রাজ্যে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরো জটিল করে তুলেছে। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন রাজ্যের প্রশাসনের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে এবং এর ভবিষ্যৎ পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। মণিপুরের পরিস্থিতি বর্তমানে অত্যন্ত সংকটজনক। দ্যা ইকোনমিক টাইমস এর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে কুকি বিদ্রোহীরা বিষ্ণুপুরের দুটি আবাসিক এলাকায় দূরপাল্লার রকেট মোতায়ন করেছে। বিষ্ণুপুরের ড্রোন হামলায় ৭৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং ছয় জন আহত হয়েছেন। রাজ্যটির রাজধানী ইমফলের পরিস্থিতিও উত্তপ্ত ছিল।

কুকি বিদ্রোহীরা কর্তুক গ্রামে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। যেখানে বেশ কিছু গাড়ি ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে বিদ্রোহীরা পাহাড়ী অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছে এবং তাদের হামলায় অন্তত তিনটি বাংকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিশের আইজি ও ডিআইজি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন এবং বিদ্রোহীদের দমনে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দুটি ভিডিওতে দেখা গেছে যে শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় পুলিশ ফোর্সের একটি গাড়িকে ধাওয়া করছে।

Exit mobile version