টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নে নারী সমাজকে পিছিয়ে রাখলে চলবে না, দারিদ্রতার বলয় থেকে নারীদের বের করে আনতে হবে । নারী জনগোষ্ঠীকে অবহেলা না করে তাদের অর্থনীতির মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে। তাতেই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কার্যকর হবে বলে মন্তব্য করেছেন অমর একুশে বইমেলার আজকের প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নারী নেত্রী হাসিনা মহিউদ্দীন।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নে নারী সমাজকে পিছিয়ে রাখলে চলবে না। দারিদ্রতার বলয় থেকে নারীদের বের করে আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নের ফলে নারী উন্নয়ন আজ সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান । ব্যবসা—বাণিজ্য, রাজনীতি, বিচারবিভাগ, প্রশাসন, কূটনীতি, সশস্ত্রবাহিনী, আইন—শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, শান্তিরক্ষা মিশনসহ সর্বক্ষেত্রে নারীর সফল অংশগ্রহনের মাধ্যমে দেশ ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
হাসিনা মহিউদ্দীন আরও বলেন, সভ্যতার গোড়াপত্তন ও তার ক্রমবিকাশে নারীর ভূমিকা পুরুষের চেয়ে কম নয়। নারী তার মেধা ও শ্রম দিয়ে যুগে যুগে সভ্যতার সকল অগ্রগতি এবং উন্নয়নে কাজ করেছে সমঅংশিদারিত্তে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারীর সমঅধিকারের বিষয়টি সংবিধানে নিশ্চিত করেছেন। তাই তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নারী পুরুষের যৌথ প্রচেষ্টায় জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে এগিয়ে আসার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধান আলোচক ডেইজি মউদুদ বলেন, রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই এই শ্লোগান এবং এই আন্দোলনে বাংলার নারীরা যে পুরুষের সহযোদ্ধা হয়ে সমানভাবে অংশগ্রহণ করেছেন এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। ভাষা আন্দোলনে নারীর উল্লখযোগ্য অবদা থাকলেও ভাষা সৈনিকদের তালিকায় নারীর অবদান ইতিহাসের পাতায় সেভাবে উঠে আসেনি। যার জন্য ভাষা সৈনিক নারীদের অবদান বাংলার মানুষের কাছে আজও অজানা। বিষয়টা দুঃখজনক।
আলোচক মাধবী বড়ুয়া বলেন, নারী পুরুষের সমতা আনয়নে নারী শিক্ষার প্রসার, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে নানামুখী আইন প্রনয়ণ ও কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে চসিক প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম বলেন, সারা বিশ্বে আজ নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে। এখন নারীর কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে, বাড়ছে স্বীকৃতি। তিনি নারী পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা দারিদ্র্য মুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
আজ মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদ ও নাগরিক সমাজের সহযোগিতায় অমর একুশে বই মেলা মঞ্চে নারী সম্মিলনে চসিক প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম এর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অমর একুশে বই মেলা কমিটির আহবায়ক কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের প্রথম নারী সাংবাদিক ও দৈনিক বাংলার ব্যুরো চীফ ডেইজি মউদুদ।আলোচক ও বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে মহিলা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ—পরিচালক মাধবী বড়ুয়া, সংরক্ষিত কাউন্সিলর নীলু নাগ।
আলোচনা সভা শেষে সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন চসিক হোসেন আহম্মদ চৌধুরী স্কুল এন্ড কলেজ, ফতেয়াবদ সিটি করপোরেশন স্কুল এন্ড কলেজ এর ছাত্র —ছাত্রী বৃন্দ ও রুম ঝুম নৃত্য কলা একাডেমি।
বুধবার অমর একুশে বই মেলা মঞ্চে সম্প্রীতি সম্মিলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন।