দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখনও জরুরি অবস্থা জারির মতো হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) ঢাকার এফডিসিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে নাগরিক সচেতনতা নিয়ে এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক বলেন, দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ভয়াবহ আকারে বাড়ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা দেরিতে হাসপাতালে আসায় মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অথচ ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ার কথা আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে। তখন পরিস্থিতি কী হবে, তা ভাবতেই ভয় হচ্ছে। গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ১৬ হাজার। অথচ এ বছর ইতোমধ্যে তা ১৮ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে এখনও জরুরি অবস্থা জারি করার মতো কোনো অবস্থা হয়নি।
খুরশীদ আলম বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনের ভূমিকা নিয়ে পারস্পরিক দোষারোপ না করে সারা বছর ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।
এ সময় ডেঙ্গু প্রতিরোধে নাগরিক সচেতনতার জন্য ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ১০ দফা সুপারিশ করেন। এগুলো হলো- ১. এডিস মশা নির্মূলে শুধু মৌসুমী কার্যক্রম পরিচালনা না করে নগরবাসীকে সম্পৃক্ত করে বছরব্যাপী কার্যকর ওষুধ ছিটিয়ে সমন্বিত কীট ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাসা বাড়িসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, নর্দমাসহ সর্বত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। ২. এডিস মশা নিধন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে নাগরিক কমিটি গঠন করা এবং জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা আয়োজন করা। ৩. এডিস মশা নিধনে আমদানিকৃত কীটনাশক স্বল্পমূল্যে বা বিনামূল্যে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মাধ্যমে নাগরিকদের প্রদান করা। ৪. এডিস মশার লার্ভা পাওয়ার অভিযোগে জরিমানা বাবদ আদায়কৃত অর্থ দিয়ে ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া অসহায় পরিবারকে সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা। ৫. মশা নিধন ও মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে কীটতত্ত্ববিদ, পরিবেশবিদ, মেডিকেল ও ভেটেরিনারি পেশার ব্যক্তিবর্গসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে মতামত গ্রহণ করা। ৬. গরিব মানুষসহ যাদের প্রয়োজন তাদের সম্পূর্ণ বিনা খরচে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পাশাপাশি মশার কামড় থেকে রক্ষায় বিনামূল্যে মশারি বিতরণ করা। ৭. ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতাল প্রস্তুত করা। ৮. ডেঙ্গু প্রতিরোধে তথ্যচিত্র নির্মাণ করে সারাদেশে প্রদর্শন করা ও তৃণমূল পর্যায়ে কমিউনিটি রেডিওতে ডেঙ্গু প্রতিরোধবিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচার করা। ৯. বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে টেস্ট ফিসহ অন্যান্য খরচ নির্ধারণে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং ১০. সরকারি হাসপাতালগুলোতে সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে জনবল বৃদ্ধিসহ কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট শিরোনামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।