চট্টগ্রামে কর্ণফুলীর দুই পাড় পতেঙ্গা ও আনোয়ারাকে যুক্ত করা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের টোল হার চূড়ান্ত করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) রাতে সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে চূড়ান্ত হওয়া টোল হার জানা যায়। এতে জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু টানেল পারাপারে সর্বনিম্ন টোল ২০০ টাকা ধরা হয়েছে প্রাইভেট কার ও জিপের জন্য। সর্বোচ্চ টোল দিতে হবে ট্রাক ও ট্রেইলারকে। ট্রেইলারের ক্ষেত্রে নির্ধারিত টোলের সঙ্গে প্রতিটি এক্সেলের জন্য আরও ২০০ টাকা করে যোগ হবে।
পিকআপ ২০০ টাকা, মাইক্রোবাস ২৫০ টাকা, বাস (৩১ সিটের কম) ৩০০ টাকা, বাস (৩২ আসনের বেশি) ৪০০ টাকা, বাস (৩ এক্সেল) ৫০০ টাকা, ট্রাক (৫ টন পর্যন্ত) ৪০০ টাকা, ট্রাক (৫ দশমিক ০১ থেকে ৮ টন) ৫০০ টাকা, ট্রাক (৮ দশমিক ০১ থেকে ১১ টন) ৬০০ টাকা, ট্রাক ও ট্রেইলার (৩ এক্সেল) ৮০০ টাকা, ট্রাক ও ট্রেইলার (৪ এক্সেল) এক হাজার টাকা এবং চার এক্সেলের বেশি ট্রাক ও ট্রেইলারগুলোকে এক হাজার টাকার সঙ্গে প্রতি এক্সেলের জন্য আরও ২০০ টাকা করে টোল দিতে হবে।
সেতু বিভাগের সূত্র জানায়, মূলত চট্টগ্রামে অবস্থিত শাহ আমানত সেতুর টোলের অঙ্ককে ভিত্তি ধরে টানেলের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। শাহ আমানত সেতুর দৈর্ঘ্য ৯৫০ মিটার, প্রস্থ ২৪ দশমিক ৪০ মিটার। এতে চার লেনের সড়কপথ রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে ১২০ মিটার সংযোগ সড়ক। সংযোগ সড়কও সেতুর সড়কের মতো প্রশস্ত। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে এতে যান চলাচল শুরু হয়। সেতুর নির্মাণ ব্যয় ছিল ৫৯০ কোটি টাকা।
এদিকে টিউবসহ কর্ণফুলী টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। টানেলের সঙ্গে পতেঙ্গা প্রান্তে শূন্য দশমিক ৫৫ কিলোমিটার, আনোয়ারা প্রান্তে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারসহ মোট ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। আনোয়ারা প্রান্তে সংযোগ সড়কের সঙ্গে ৭২৭ মিটার উড়ালসেতু রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রকল্পে ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার নতুন পথ তৈরি করা হচ্ছে।
আগামী সেপ্টেম্বরে যান চলাচলের জন্য টানেলটি চালু হলে কী পরিমাণ যান চলাচল করবে, এ নিয়ে ২০১৩ সালে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। সেই সমীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, টানেল চালুর বছরে ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করতে পারে। সে হিসাবে দিনে চলতে পারে ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি। ২০২৫ সাল নাগাদ টানেল দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন চলবে। এর মধ্যে অর্ধেক থাকবে পণ্যবাহী যান। ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার ৯৪৬টি এবং ২০৬৭ সালে ১ লাখ ৬২ হাজার যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে।