চট্টগ্রাম, ১৪ এপ্রিল — বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হলো নরেন আবৃত্তি একাডেমি আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য বৈশাখী উৎসব। পহেলা বৈশাখের প্রভাতে সিজেকেএস মুক্ত মঞ্চে আয়োজনটি পরিণত হয় সুর, ছন্দ ও বর্ণের এক মিলনমেলায়।
সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীত ও দলীয় আবৃত্তির মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হয়। এরপর একে একে মঞ্চে আসে চট্টগ্রামের বিভিন্ন আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। দিনভর পরিবেশনায় ছিল একক ও দলীয় আবৃত্তি, লোকনৃত্য, সংগীত, এবং মূকাভিনয়।
এতে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পরিবেশনা নিয়ে অংশগ্রহণ নরেন আবৃত্তি একাডেমি, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, সাইলেন্স থিয়েটার , সুর চক্র , ঘুঘুর নৃত্য কলা , সুর চক্র , দ্যা স্কুল অফ ফোক ড্যান্স, সুরাংগন বিদ্যাপীঠ , মাধুরী নৃত্যকলা একাডেমি , যোগসূত্র কলাকেন্দ্র , নৃত্যরঙ , নৃত্যময়ী , লাকি ডায়না , সৃষ্টি কালচার , দেবাঞ্জলী সংগীত একাডেমী, তমা , আব্দুল হালিম , অদ্রি দাশ গুপ্তা , উর্মি রয় , প্রিয়াঙ্কা দাশ , সীমান্ত বডুয়া , ঝুমা দাশ , মৌসুমি চৌধুরী , তৈহিদ হাসান ইকবাল , অজয় চক্রবর্তী , প্রিয়ন্তি দাশ পৃথা
প্রতিটি পরিবেশনায় ছিল যত্ন ও পরিশ্রমের ছাপ। শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে মঞ্চ ছিল প্রাণবন্ত, আর অভিজ্ঞ শিল্পীদের আবৃত্তি ও অভিনয়ে মুগ্ধ হন দর্শকরা। দর্শকের চোখে পড়ার মতো ছিল সাইলেন্স থিয়েটারের ২০ মিনিটব্যাপী প্যালেষ্টাইন নিয়ে মূকাভিনয়—যা শব্দহীন ভাষায় প্রকাশ করে দেয় বৈশাখের গভীর অনুভূতি। এই ছাড়াও ছিল শিশু ও কিশোর শিল্পীদের দলীয় আবৃত্তি, একক আবৃত্তি, গান, এবং নাট্যভিত্তিক পরিবেশনা, দলীয় সংগীত, দলীয় ওএকক নৃত্য পরিবেশনা
এই ছাড়া হ্যাপি চৌধুরীর উপস্থাপনায় অনুষ্টানে বক্তৃব্য রাখেন , বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোহাম্মদ সেকান্দর, আলাউদ্দিন ফরহাদ, সৈয়দ হোসেন বাবু, দিদারুল আলম, মারওয়া আনজুমানে জান্নাত, প্রবাল চৌধুরী, প্রসেনজিৎ বড়ুয়া।
উৎসবটি ছিল প্রাণের খোরাক। অনেক দর্শক পরিবারসহ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান করেন। শিশুদের পরিবেশনা ছিল সবচেয়ে বেশি প্রশংসিত, কারণ তাদের কণ্ঠে ও মুখভঙ্গিতে ছিল নিষ্পাপ উচ্ছ্বাস ও বৈশাখের নির্মলতা।
নরেন আবৃত্তি একাডেমির পরিচালক মিশফাক রাসেল বলেন,
এই উৎসব আমাদের অস্তিত্বের উৎসবে রূপ নিয়েছে। বৈশাখ মানেই শুধু উচ্ছ্বাস নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির সবচেয়ে জীবন্ত প্রকাশ। আমরা চেষ্টা করেছি সবাইকে একত্রিত করতে—শুধু শিল্পী নয়, দর্শক, অভিভাবক ও নতুন প্রজন্মকেও। এ ছাড়া তিনি অনুষ্টানে সার্বিক ভাবে সহযোগিতার জন্য সম্মিলিত সাংস্কৃতিক পরিষদ, চট্টগ্রাম কে বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ জানান ।
সাদা পাঞ্জাবি, লাল শাড়ি, গালভরা হাসি, আর মঞ্চভরা শব্দ—সব মিলিয়ে পহেলা বৈশাখের এই আয়োজন চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে এনে দেয় আনন্দের নতুন আলো।
নরেন আবৃত্তি একাডেমির এই উৎসব একদিকে যেমন ঐতিহ্যের ধারক, তেমনি নতুন প্রজন্মের জন্য হয়ে উঠেছে এক প্রেরণাদায়ী অভিজ্ঞতা।