বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে সেক্টরভিত্তিক ১০টি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছে, যার মধ্যে অন্যতম প্রস্তাব হলো, কোনো ব্যক্তি পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। বুধবার (৯ অক্টোবর), ঢাকার গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রস্তাবনা তুলে ধরেন জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। সংবাদ সম্মেলনে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ অন্যান্য জ্যেষ্ঠ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জানায়, প্রস্তাবিত এই ১০টি সুপারিশ শুধুমাত্র অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য প্রযোজ্য। তারা আরও উল্লেখ করে, তাদের মোট ৪১টি প্রস্তাব রয়েছে, যার মধ্যে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব আজ তুলে ধরা হয়েছে।
জামায়াতের রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনার মূল খাতসমূহ:
- আইন ও বিচার: উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা, সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল, ও বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপন।
- সংসদীয় সংস্কার: সংসদের প্রধান বিরোধীদল থেকে একজন ডেপুটি স্পিকার মনোনয়ন, ছায়া মন্ত্রিসভা গঠন, ও সংসদে বিরোধী দলের অধিক সময় নিশ্চিতকরণ।
- নির্বাচনী ব্যবস্থা: আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থা, কেয়ারটেকার সরকার পুনর্বহাল, ও ইভিএম বাতিলের প্রস্তাবনা।
- আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: পুলিশ ও র্যাব সংস্কার, স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন, এবং র্যাবের মনিটরিং সেল গঠন।
- জনপ্রশাসন: যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ ও বদলি, আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি, ও সরকারি চাকরিতে দুর্নীতি প্রতিরোধ।
- দুর্নীতি দমন: দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি, পাচারকৃত অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা, ও মন্ত্রণালয় ভিত্তিক দুর্নীতি নিরোধক ব্যবস্থা।
- সংবিধান: রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, এবং পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন নিষিদ্ধ।
- শিক্ষা ও সংস্কৃতি: পাঠ্যপুস্তকে ধর্মীয় মূল্যবোধ সুরক্ষা, কারিগরি শিক্ষা প্রচলন, ও অশ্লীলতামুক্ত নাটক ও সিনেমা প্রচার।
- পররাষ্ট্র: আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পুনর্বিবেচনা, SAARC পুনর্গঠন, ও জাতিসংঘের মাধ্যমে নদীর পানিবণ্টন চুক্তির উদ্যোগ।
- ধর্ম মন্ত্রণালয়: ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পুনর্গঠন, হজ ব্যবস্থাপনার স্বতন্ত্র অধিদপ্তর গঠন, এবং ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণ।
এই সংস্কার প্রস্তাবনা নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের দলীয় অবস্থানকে আরও সুসংহত করতে চায়।