ঘূর্ণিঝড় ‘মিল্টন’ ধেয়ে আসছে, কোথায় হবে আঘাত?
ঘূর্ণিঝড় ‘মিল্টন’ ধেয়ে আসছে, কোথায় হবে আঘাত?

ঘূর্ণিঝড় ‘হেলেন’-এর পর এবার যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ধেয়ে আসছে আরেকটি শক্তিশালী ঝড় ‘মিল্টন’। এই ঝড়টি চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে ফ্লোরিডার উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আঘাত করার আগে ‘মিল্টন’ দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে একটি বড় হারিকেনে রূপ নিতে পারে। রোববার ফ্লোরিডার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা। মিয়ামির ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, রোববার ভোরে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় ‘মিল্টন’ ফ্লোরিডার টেম্পা থেকে প্রায় ১ হাজার ৩৮৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঝড়টি ঘণ্টায় ৭ কিলোমিটার গতিতে পূর্বদিকে অগ্রসর হচ্ছে, তবে এটি বর্তমানে ঘণ্টায় ৯৫ কিলোমিটার বেগে ঘুরছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর শক্তি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং এটি আঘাত হানার সময় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে।

ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মিল্টন’ ঠিক কোথায় আঘাত হানবে তা এখনও স্পষ্ট নয়, তবে এটি ফ্লোরিডার কিছু এলাকায় তীব্র আঘাত হানতে পারে। সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলো থেকে বাসিন্দাদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সোমবার এবং মঙ্গলবার (৭-৮ অক্টোবর) বাধ্যতামূলক ও স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হবে। ঝড়টি আঘাত হানার আগে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

এর আগে, গত মাসের শেষদিকে ফ্লোরিডার বিগ বেন্ড উপকূলে আঘাত হেনেছিল হারিকেন ‘হেলেন’। সেই ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪০ মাইল (প্রায় ২২৫ কিলোমিটার)। হারিকেন ‘হেলেন’-এর তাণ্ডবে বিগ বেন্ড ও আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। অসংখ্য গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছিল, এবং বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। শত শত রাস্তা ডুবে গিয়েছিল এবং বেশ কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছিল।

হারিকেন ‘মিল্টন’ যদি একই ধরনের শক্তি নিয়ে আঘাত হানে, তবে ফ্লোরিডার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে আরও বড় ধরনের বিপর্যয় হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ফ্লোরিডার উপকূলীয় এলাকাগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধার কার্যক্রম ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে মানুষ সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ঘূর্ণিঝড় মিল্টন-এর গতিবেগ এবং দিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা থাকায় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে।

ফ্লোরিডার বাসিন্দারা ইতোমধ্যে আগের ঝড়ের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েছে এবং সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, তবে ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন