ইরাকি ড্রোন হামলায় উত্তর ইসরায়েলে দুই সেনা নিহত হয়েছে। এ হামলায় আরও অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে ইরাকের ইসলামিক রেজিস্ট্যান্সের পক্ষ থেকে একটি ড্রোন হামলা চালানো হয়। এই গোষ্ঠী গত এক বছরে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে। আল জাজিরার সংবাদদাতার বরাতে জানা গেছে, এবারই প্রথমবারের মতো ইরাকের ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স একসঙ্গে এমন একটি আক্রমণ করেছে। নিহত ইসরায়েলি সেনার সংখ্যা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ১৯৭৩ সালের পর এই প্রথম কোনো ইরাকি হামলায় ইসরায়েলি সেনা প্রাণ হারাল।
গোলান হাইটসে একটি সামরিক ঘাঁটিতে অবস্থানরত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর গোলানি ব্রিগেডের দুই সদস্য হামলার সময় নিহত হন। প্রাথমিকভাবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন যে, ওই দুই সেনা “যুদ্ধে” নিহত হয়েছেন, তবে পরে তারা স্বীকার করেন যে, তারা ড্রোন হামলার ফলেই মারা গেছেন।
এই হামলার প্রেক্ষাপটে উল্লেখ্য যে, বৃহস্পতিবার লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘর্ষে ইসরায়েলের অন্তত আট সেনা নিহত হয়েছে। এটি দেখায় যে, অঞ্চলটিতে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে।
এ ধরনের হামলার ঘটনা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে যখন তারা আগ্রাসী হামলার বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষা করতে কঠোর পরিশ্রম করছে। ইসরায়েলি সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই হামলা ইরাকের ইসলামিক রেজিস্ট্যান্সের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের প্রতি একটি নতুন যুদ্ধের সূচনা হতে পারে, যা ভবিষ্যতে আরো বড় আকার ধারণ করতে পারে।
এদিকে, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী তাদের সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা সীমান্তের সুরক্ষা বাড়ানোর জন্য নতুন প্রযুক্তি ও কৌশল ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে। যদিও ইসরায়েলি সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি, তবে সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচেষ্ট রয়েছে।
এই হামলার ফলে ইসরায়েলি জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এ ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুতর উল্লেখ করে বলেছেন, ইসরায়েল তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোনো ধরনের আপোষ করবে না। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের সেনাদের রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাব।”
এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েল ও তার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে আরও বড় সংঘাতের সৃষ্টি করতে পারে।