চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ওয়াদেহপুর ইউনিয়নের ছোট কমলদহ রূপসী ঝরনায় শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে পা পিছলে পড়ে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ডুবুরি দল তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে। নিহতদের মধ্যে একজন মুশফিকুর রহমান আদনান (২১), যিনি রাজধানীর ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলেন। অপরজন মাহবুবুর রহমান মুত্তাকিন (২২) নারায়ণগঞ্জের একটি সরকারি কলেজের ছাত্র। দুই শিক্ষার্থীসহ মোট ১৪ জন বন্ধু নারায়ণগঞ্জ থেকে মিরসরাইয়ের রূপসী ঝরনায় বেড়াতে গিয়েছিলেন।
শুক্রবার সকালে, ঝরনায় গোসল করতে নামার সময় তারা পানিতে তলিয়ে যান। সকাল ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল তাদের সন্ধানে অভিযান শুরু করে। পরে দুপুরের দিকে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারী জানান, উদ্ধার কার্যক্রমে নিখোঁজ থাকা দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে মৃতদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয়রা ঝরনায় সুরক্ষা ব্যবস্থা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, এসব ঝরনায় আগেই সুরক্ষার অভাব ছিল এবং এর আগে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে। কিছুদিন আগে, ২৭ সেপ্টেম্বর, খৈয়াছড়া ঝরনায় পাথর পড়ে মাহবুব হাসান (৩০) নামের একজন ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছিল। তার মৃত্যুর পর, ২৮ সেপ্টেম্বর, বন বিভাগের পক্ষ থেকে ঝরনায় পর্যটক প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল এবং সংস্কার কাজ শুরু করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, ঝরনা এলাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। কারণ, এই অঞ্চলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য ঝরনাগুলো আকর্ষণীয় স্থান হলেও সুরক্ষার অভাব তাদের জীবনের ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কর্তৃপক্ষকে আরও সচেতন হওয়ার এবং দর্শনার্থীদের জন্য সতর্কতা নির্দেশিকা প্রবর্তন করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন তারা।
এ ঘটনার পর, মিরসরাইয়ের স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য নতুন পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং তারা আরও সচেতনতা বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন। এই দুটি মৃত্যুর ঘটনা প্রমাণ করে যে, নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে ঝরনাসমূহে প্রবেশ করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
অতএব, মিরসরাইয়ের রূপসী ঝরনা এবং অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা একান্ত জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে এরকম মর্মান্তিক ঘটনা আর না ঘটে।