বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দল সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকানা জোরপূর্বক দখলের অভিযোগে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি রাজধানীর পল্লবী থানায় সাবেক মালিক সারোয়ার চৌধুরী বাদী হয়ে দায়ের করেছেন। এই মামলায় মাশরাফীকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে সারোয়ার চৌধুরী উল্লেখ করেছেন যে, সিলেট স্ট্রাইকার্সের মাদার প্রতিষ্ঠান ফিউচার স্পোর্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের মালিকানা তার কাছ থেকে জোরপূর্বক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সারোয়ার দাবি করেছেন যে, মাশরাফী এবং হেলাল বিন ইউসুফ শুভ্র নামের অপর একজন মালিক তার ওপর চাপ সৃষ্টি করে। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, হেলাল তার মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে তাকে ভয় দেখিয়েছেন।
মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ছাড়াও মামলায় আরও সাতজনকে আসামি করা হয়েছে, যার মধ্যে হেলাল বিন ইউসুফ শুভ্র, মো. ইমাম হাসান, অজ্ঞাত (রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানির এক কর্মকর্তা), কে এম রাসেল, বাবলু এবং অজ্ঞাত ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। জানা গেছে, মাশরাফীর সাথে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্যবসায়ী সারোয়ারের পরিচয় ঘটেছে মামলার দ্বিতীয় আসামী হেলাল বিন ইউসুফের মাধ্যমে।
সারোয়ার বিপিএলে একটি দল কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এই প্রক্রিয়ায় তিনি “ফিউচার স্পোর্টস বাংলাদেশ লিমিটেড” নামে একটি জয়েন্ট স্টক কোম্পানির নিবন্ধন করেন। কোম্পানিতে ৬০% শেয়ার নিয়ে তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, এবং বাকি ৪০% শেয়ার নিয়ে ইমাম হাসান কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হন।
এদিকে, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা এবং তার বাবা গোলাম মোর্ত্তজা স্বপনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় মিছিলে হামলা, গুলি ছোড়া এবং মারধরের অভিযোগে করা এই মামলায় মাশরাফী ছাড়াও আওয়ামী লীগের ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয়ে ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মাশরাফীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এই মামলা দেশের ক্রীড়া মহলে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জাতীয় দলের এই কিংবদন্তি খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তার সামাজিক এবং রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো যদি প্রমাণিত হয়, তবে তা বাংলাদেশের ক্রীড়া এবং রাজনৈতিক পরিসরে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে মাশরাফীর ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে। তিনি যেহেতু ইতিমধ্যে রাজনৈতিক জীবনেও সক্রিয় হয়েছেন, সেহেতু এই মামলা তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ওপরও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের একটি উজ্জ্বল নাম মাশরাফী এখন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।