আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের ১১টি জেলার ওপর দিয়ে দুপুরের মধ্যে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে এই ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের নদীবন্দরের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে। আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
মৌসুমী বায়ুর সক্রিয়তা এবং অক্ষের বিস্তার এ ধরনের আবহাওয়ার জন্য দায়ী। ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাস অনুযায়ী, মৌসুমী বায়ুর অক্ষটি মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি অংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরেও রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি দেশের কিছু কিছু এলাকায় মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণও হতে পারে।
দেশের আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রায়ও কিছুটা হেরফের হতে পারে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমতে পারে, তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
মৌসুমী বায়ুর প্রভাব এবং বজ্রবৃষ্টি সম্ভাবনার কারণে কৃষি, ব্যবসা এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রমে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে নদীবন্দর এবং উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, যাতে তারা ঝোড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টির কারণে সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো এড়াতে পারে।
অতিবর্ষণের ফলে বিভিন্ন স্থানে বন্যা এবং ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়তে পারে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম এবং সিলেট অঞ্চলে অতিভারি বর্ষণ হলে এসব সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের এই অংশগুলোর জনগণকে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সর্বোপরি, বর্তমান আবহাওয়ার পরিস্থিতি মৌসুমী বায়ুর প্রভাব এবং আন্তর্জাতিক আবহাওয়ার পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত। এ ধরনের বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা আরও কয়েকদিন ধরে অব্যাহত থাকতে পারে। তাই, আবহাওয়া সংক্রান্ত আপডেটের দিকে নজর রাখা এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।