সাইবার নিরাপত্তা আইনের মামলাগুলো প্রত্যাহার, মুক্তি পাচ্ছেন গ্রেপ্তারকৃতরা
সাইবার নিরাপত্তা আইনের মামলাগুলো প্রত্যাহার, মুক্তি পাচ্ছেন গ্রেপ্তারকৃতরা

সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীনে দায়ের করা মুক্তমত প্রকাশ-সংক্রান্ত (স্পিচ অফেন্স) মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব মামলায় যেসব ব্যক্তি গ্রেপ্তার আছেন, তারা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিগগিরই মুক্তি পাবেন। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আইন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয় যে, ডিজিটাল মাধ্যমে মত প্রকাশের জন্য দায়ের হওয়া মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি করার লক্ষ্যেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

সাইবার নিরাপত্তা আইনের প্রেক্ষাপটে, বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এবং সর্বশেষ সাইবার নিরাপত্তাআইন, ২০২৩-এর অধীনে বাংলাদেশে মোট ৫,৮১৮টি মামলা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে স্পিচ অফেন্স-সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা ১,৩৪০টি। এই মামলাগুলোর মধ্যে ৪৬১টি এখন তদন্তাধীন রয়েছে এবং বাকি ৮৭৯টি মামলা দেশের ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।

এসব মামলাগুলোর একটি অংশ “স্পিচ অফেন্স” হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যেখানে ডিজিটাল মাধ্যমে মত প্রকাশের কারণে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধগুলোকে “কম্পিউটার অফেন্স” হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। স্পিচ অফেন্সের মামলাগুলোর মধ্যে ২৭৯টি মামলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ৭৮৬টি মামলা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, এবং ২৭৫টি মামলা সাইবার নিরাপত্তাআইনের অধীনে চলমান রয়েছে।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৮৭৯টি বিচারাধীন মামলা আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে। এ ছাড়া, তদন্তাধীন ৪৬১টি মামলার তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হবে।

সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩-এর মূল উদ্দেশ্য হলো ডিজিটাল মাধ্যমে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা এবং দেশের সাইবার স্পেসকে সুরক্ষিত রাখা। তবে এই আইনের আওতায় মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে যুক্ত কিছু মামলার ব্যাপারে সমালোচনা উঠে আসে। এর প্রেক্ষিতে, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে মত প্রকাশের জন্য দায়ের হওয়া মামলাগুলোকে দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে এবং সাইবার নিরাপত্তা-আইনের মূল লক্ষ্য বজায় রেখে এই আইনের প্রয়োগে ভারসাম্য আনা হবে।

এই সিদ্ধান্তের ফলে সাইবার নিরাপত্তাআইনের অধীনে দায়ের করা মামলাগুলোর বেশিরভাগই দ্রুত নিষ্পত্তি হবে এবং এতে সাধারণ মানুষ তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন