সাগর-রুনি হত্যা তদন্তে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশনা
সাগর-রুনি হত্যা তদন্তে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশনা

হাইকোর্ট র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‍্যাব) সরিয়ে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। আদালত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এই টাস্কফোর্স গঠন করে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। হাইকোর্ট আরও নির্দেশ দিয়েছে, টাস্কফোর্সকে ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে হবে। আদালত ২০২৫ সালের ৬ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেছে। এই নির্দেশ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ দিয়েছেন। শুনানিতে বেঞ্চটি মন্তব্য করেছে, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের বিলম্ব নিহতদের পরিবার ও পুরো জাতির জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি। সাগর তখন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক এবং রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক। এই হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে রুনির ভাই নওশের আলম শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে থাকলেও, ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টের এক আদেশের মাধ্যমে র‍্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় তদন্তের ধীরগতির সমালোচনা হতে থাকে। এই প্রেক্ষাপটে, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলাটি র‍্যাব থেকে সরিয়ে নতুনভাবে তদন্তের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে টাস্কফোর্স গঠনের আবেদন করা হয়।

রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টে এই আবেদনের শুনানি হয়, যেখানে রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ এবং অনীক আর হক উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেদওয়ান আহমেদ রানজিবও ছিলেন। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোর্শেদ, এবং বাদীপক্ষের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন।

আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, দীর্ঘ ১২ বছরেও তদন্ত শেষ না হওয়া সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে একটি বড় ব্যর্থতা। আদালত আশা করে, টাস্কফোর্স দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত শেষ করে ঘটনার প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করবে এবং হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।

এই টাস্কফোর্স গঠনের মধ্য দিয়ে মামলাটির দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রিপ্লাই দিন

আপনার কমেন্ট লিখুন
আপনার নাম লিখুন