Site icon দৈনিক পূর্বদেশ | বাংলা নিউজ পেপার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় : শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে হলে নির্যাতন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় : শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে হলে নির্যাতন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় : শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে হলে নির্যাতন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এর এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিত শিক্ষার্থীর নাম হায়াত উল্লাহ, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। এই ঘটনা ঘটে ২৮ সেপ্টেম্বর, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবদুর রব হলে। হায়াত উল্লাহর সহপাঠী ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি নির্দেশনা জারি করে যেখানে আবাসিক হল থেকে শিক্ষার্থীদের জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী, হায়াত ক্যাম্পাসে এসে তাঁর হল থেকে মালামাল নিয়ে যাচ্ছিলেন। সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে তাকে তিনজন শিক্ষার্থী অপহরণ করে শহীদ আবদুর রব হলে নিয়ে যায়।

সহপাঠীরা আরও জানান, অভিযুক্ত তিনজনও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থী। তবে তাদের পরিচয় এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেনি। ভুক্তভোগী হায়াত উল্লাহ জানান, অপহরণের পর তাকে হলের ৩২৪ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তারা তাকে জিজ্ঞেস করে কীভাবে হলে উঠেছিলেন। এরপর প্রায় ১০ মিনিট ধরে তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। তার বর্ণনায় উঠে আসে, “তারা আমাকে আবদুর রব হলের দিকে নিয়ে যায়, আমি বুঝতে পারিনি তারা কী উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছে। পরে আমাকে একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে মারধর করে।”

কিছুক্ষণ পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির কয়েকজন শিক্ষক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে অভিযোগ জমা দেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন। হায়াত উল্লাহ নিজেও এই ঘটনার দ্রুত ও সঠিক বিচার চান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক সাইদা আকতার জানান, হায়াত উল্লাহর শরীরে রক্ত জমাট বেঁধেছিল এবং রক্তচাপও বৃদ্ধি পেয়েছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্স-রে ও পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছে।

এই ঘটনার বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, “সম্ভবত, হল থেকে জিনিসপত্র নিতে গিয়ে কয়েকজন বন্ধুর মধ্যে কোনো বিষয়ে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আমরা তদন্ত করছি এবং এই ঘটনায় যেই জড়িত থাকুক, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা মাঝে মাঝে ঘটলেও প্রশাসন এমন ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের এই পদক্ষেপ প্রশংসনীয় বলে মনে করা হচ্ছে। হায়াত উল্লাহর ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার গুরুত্ব আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে, যেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে।

Exit mobile version