ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, এবছর বাংলাদেশে প্রায় ৩২ হাজার মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে পূজার সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশের ৬৪টি জেলার ডিসি (জেলা প্রশাসক) ও এসপি (পুলিশ সুপার) সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মিটিংয়ের মাধ্যমে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনার মূল উদ্দেশ্য হলো, স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সমন্বয় করে দুর্গাপূজা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং কোনও প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আগেই তা প্রতিরোধ করা।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের পাথরঘাটা এলাকার সেন্টপ্লাসিট স্কুল ও জপমালা রানী ক্যাথিড্রাল গির্জা পরিদর্শন শেষে আর্চবিশপ হাউসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ড. খালিদ হোসেন বলেন, “বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল ধরে এদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে একসঙ্গে বসবাস করে আসছে। আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক, এবং একটি পরিবার হিসেবে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, দেশের উন্নয়ন কেবল অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতিও এই উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। “আমাদের উচিত, সবাই মিলে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করা,” বলেন তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “মাঝেমধ্যে কিছু দুর্বৃত্ত উপাসনালয়ে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু রাষ্ট্র সবসময় প্রতিটি ধর্মের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং আগামীতেও দাঁড়াবে। ধর্মচর্চা, ধর্ম অনুশীলন, এবং ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রে সরকার সবসময় সহায়তা করে যাবে।”
ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের প্রতিটি ধর্মের লোকজনের মধ্যে পারস্পরিক সহনশীলতা এবং সৌহার্দ্য বজায় রাখতে হবে। “আমরা সবাই একে অপরের ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে সমাজে শান্তি বজায় থাকবে এবং দেশ আরও দ্রুতগতিতে উন্নতি করতে পারবে,” তিনি যোগ করেন।
তিনি বলেন, “একটি দেশ তখনই প্রকৃত অর্থে উন্নত হতে পারে, যখন তার জনগণ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রগুলোতে একত্রে কাজ করে। ধর্মীয় সম্প্রীতি এই প্রক্রিয়ার একটি মূল উপাদান।”
ধর্ম উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেনের বক্তব্যে স্পষ্ট হয় যে, সরকার ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। সরকারের এই পদক্ষেপ দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদী।
তিনি আরও আশ্বাস দেন যে, সরকার দেশের প্রতিটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে এবং নিশ্চিত করবে যে, প্রতিটি ধর্মের মানুষ নিরাপদে ও শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারে। – দুর্গাপূজা