আগাম কোনো সতর্কবার্তা বা পূর্বাভাস ছাড়াই দক্ষিণ কোরিয়ার বিখ্যাত শহর বুসানের রাস্তায় একটি বিশাল সিংক হোল তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি, ভারী বৃষ্টির মধ্যে ২৪ ফুট গভীর এই গর্তে দুটি ট্রাক পড়ে যায়। ২০ সেপ্টেম্বর সকালবেলায় বুসানের শাসাঙ্গু এলাকায় প্রবল বৃষ্টির সময় এই ঘটনা ঘটে, যেখানে গর্তটির চওড়ায় ছিল ৩০ ফুট এবং দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৫ ফুট।
এমন ঘটনা কেবল বুসানেই নয়, ভারতের পুনে শহরেও ঘটেছে। সেখানে একটি দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক হঠাৎ করেই মাটির নিচে চলে যায়। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আবর্জনা তোলার কাজ চলাকালীন একটি বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়, যার ফলে গোটা ট্রাক কয়েক ফুট মাটির নিচে পড়তে থাকে। সিংক হোল হলো এমন একটি বিশাল গর্ত, যা প্রকৃতিতে হঠাৎ সৃষ্টি হয় এবং শহরের বড় অংশ, ফসলী জমি বা অন্য যেকোনো ধরনের ভূমিতে বিলীন হতে পারে।
সিংক হোলের সৃষ্টি প্রাকৃতিক এবং মানবসৃষ্ট উভয় কারণে ঘটে। প্রাকৃতিক সিংক হোল তৈরি হয় যখন মাটির নিচে বৃষ্টির পানি জমা হয়ে ফাঁকা জায়গা তৈরি করে। যখন মাটির উপরের স্তরের ওজন বৃদ্ধি পায়, তখন এই শূন্যস্থানে ভূমিদস ঘটে। মানবসৃষ্ট সিংক হোল সাধারণত নির্মাণ কাজ বা পানির লাইন লিকেজের কারণে হয়। বছরের পর বছর ধরে পানির লাইন থেকে লিকেজ হলে, জলধারা তৈরি হয় এবং সেই স্থান ধীরে ধীরে গর্তের আকার নেয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে সিংক হোলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দক্ষিণ চীন সাগরের ড্রাগন হোল হলো পৃথিবীর গভীরতম আন্ডারওয়াটার সিংক হোল, যা প্রায় ১০০০ ফুট গভীর। ভূগর্ভের পানি মাত্রাতিরিক্ত উত্তোলনের কারণে সিংক হোলের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, এভাবে চলতে থাকলে এই দানবাকার গর্তের কারণে আমাদের জনজীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড: সিংক হোল, বুসান সিংক হোল, মানবসৃষ্ট গর্ত, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, ভূগর্ভের পানি, পুনে সিংক হোল, দক্ষিণ চীন সাগর, ড্রাগন হোল, ভূতাত্ত্বিক গবেষণা।