জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহমদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ফরিদ আহমদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়। আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর করা মামলায় অধ্যাপক ফরিদকে গ্রেপ্তার করে আজ বেলা ১১টার দিকে আদালতে নেওয়া হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী অধ্যাপক ফরিদ আহমদকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করে। তাদের অভিযোগ ছিল, অধ্যাপক ফরিদ সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন এবং ওই হামলার সময় তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্ররোচনা দিয়েছেন।
অধ্যাপক ফরিদ আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগটি শুরু হয় ১৫ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার পর। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল ইসলাম গত ২৯ সেপ্টেম্বর আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই উপাচার্য, প্রক্টরসহ মোট ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা ২০০ জনসহ মোট ২১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। অধ্যাপক ফরিদকে ওই মামলার ৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এই হামলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের একটি উদাহরণ। তারা মনে করছেন, এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এবং সঠিক শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে, এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। তারা দাবি করছেন, অভিযুক্তদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করা হোক। শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি শিক্ষার্থীদের আহ্বান, তারা যেন এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেন এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম দায়িত্ব।
অধ্যাপক ফরিদ আহমদের গ্রেপ্তারের ঘটনা আবারও এই বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও বৈষম্য নিয়ে কতটা সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে, শিক্ষার্থীদের অধিকার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের প্রধান কর্তব্য হওয়া উচিত।