সেপ্টেম্বর মাসেই চারবার স্বর্ণের মূল্য বাড়ানোর পর এবার বাংলাদেশের বাজারে কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। সর্বোচ্চ ১,২৬০ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের নতুন দাম ভরিতে নির্ধারণ করা হয়েছে ১,৩৭,৪৪৮ টাকা। যা আগে ছিল ১,৩৮,৭০৮ টাকা। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বাজুস জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম হ্রাস পাওয়ায় নতুন করে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন এই দাম আগামীকাল রবিবার থেকে কার্যকর হবে। এর আগে ২৫, ২৪, ২১ ও ১৪ সেপ্টেম্বর স্বর্ণের মূল্য কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক এই মূল্য পরিবর্তনের ফলে, গ্রাহকরা এখন অপেক্ষাকৃত কম দামে স্বর্ণ কিনতে পারবেন।
নতুন দাম অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম হবে ১,৩৭,৪৪৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম হবে ১,৩১,১৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম হবে ১,১২,৪৫২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২,২৮৬ টাকা।
এদিকে, স্বর্ণের দাম কমানোর পাশাপাশি রুপার দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপার দাম ২,১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২,০০৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের রুপার দাম ১,৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১,২৮৩ টাকায় স্থির করা হয়েছে।
স্বর্ণের মূল্যবৃদ্ধি এবং হ্রাসের পেছনে আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা একটি বড় কারণ হিসেবে কাজ করে। স্থানীয় বাজারে স্বর্ণের চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য বজায় রাখতে এসব পরিবর্তন সময়ে সময়ে করা হয়। বাংলাদেশের বাজারে স্বর্ণের মূল্য নির্ধারণে বৈশ্বিক স্বর্ণের বাজারের অবস্থা এবং স্থানীয় মুদ্রার মানের ওপর নজর রাখা হয়।
সম্প্রতি স্বর্ণের দাম বৃদ্ধির কারণে দেশীয় ক্রেতাদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ দেখা দেয়, বিশেষত যারা বিবাহ বা অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্য স্বর্ণ কিনতে চেয়েছিলেন। বাজুসের এই দাম কমানোর ঘোষণা তাই স্বর্ণের ক্রেতাদের জন্য একটি স্বস্তির খবর। বিশেষ করে যারা স্বর্ণের গয়না বা অলংকার ক্রয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন, তারা এখন কম দামে এটি কিনতে পারবেন।
তবে মূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং বাজারের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার ব্যাপারে বাজুস তাদের কঠোর মনোভাব বজায় রাখবে। মূল্য নির্ধারণে আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা এবং স্থানীয় চাহিদার পাশাপাশি অন্যান্য অর্থনৈতিক উপাদানগুলোকেও বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছে বাজুস।
এদিকে, স্বর্ণের দাম কমলেও সামনের মাসগুলোতে এই দাম কতটা স্থায়ী থাকবে তা নিয়ে বিশ্লেষকরা এখনো অনিশ্চিত। বৈশ্বিক বাজারের অবস্থা এবং ডলারের বিনিময় হার প্রভাব ফেলতে পারে বাংলাদেশের স্বর্ণের বাজারে। তবুও, ক্রেতারা এখন স্বল্প মূল্যে স্বর্ণ কেনার সুযোগ পাচ্ছেন, যা সাময়িকভাবে হলেও বাজারে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।