ভারতের মহারাষ্ট্রে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে অবমাননার অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠেছে। এক ধর্মীয় প্রচারক ইসলাম ও মুহাম্মদ (সা.) নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার পর, রাজ্যের বিজেপি বিধায়ক নিতেশ রানা এ মন্তব্যের সমর্থন জানিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন, যার ফলশ্রুতিতে মুসলিম সমাজের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত মাসের প্রথম দিকে, মহারাষ্ট্রের এক ধর্মীয় সভায় কট্টর হিন্দুত্ববাদী প্রচারক রামগিরি মহারাজ ইসলামের বিরুদ্ধে কটুক্তি করেন। তাঁর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে, বিজেপি বিধায়ক নিতেশ রানা মসজিদে ঢুকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে হামলার হুমকি দেন। এই উসকানিমূলক মন্তব্যের ফলে পুরো রাজ্যে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে।
অত্যাচারের প্রতিবাদে মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা মুম্বাই অভিমুখে লং মার্চের ডাক দিয়েছেন। হাজার হাজার মুসলিম এই মার্চে অংশ নিচ্ছেন, যা মহারাষ্ট্রের এক্সপ্রেসওয়ে গুলোকে জনসমুদ্রে পরিণত করেছে। প্রতিবাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে মুহাম্মদ (সা.) অবমাননার বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির দাবি তোলা।
এআইএমআইএম নেতা ইমতিয়াজ জলিল এই প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন এবং অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “রাজ্যের সকল মুসলিম ভাই ও বোনদের আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা যেন এই মার্চে অংশ নেন এবং আমাদের অধিকার রক্ষার জন্য সংগ্রাম করেন।”
মহানবীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য এই আন্দোলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ধর্মীয় নেতারা। তারা আশা করছেন, এই আন্দোলনের মাধ্যমে রাজ্যের পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে এবং মুসলিম সমাজের অধিকারের প্রতি সজাগ দৃষ্টি দেওয়া হবে।
মুম্বাই অভিমুখে এই মার্চের সময় মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন ব্যানারে তাঁদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। মহানবীর অবমাননা এবং মুসলিমদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। অনেকেই এই ঘটনাকে ভারতের ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন।
এদিকে, রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেষ্টা করছে। তারা জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে এই মার্চ শেষ করতে হলে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, অনেকেই মনে করছেন, পরিস্থিতি যে কোন সময় অশান্ত হয়ে উঠতে পারে।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে অবমাননা করার এ ঘটনায় সারা দেশে মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এই আন্দোলনের ফলে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতে পারে, যা আগামী দিনে আরো বড় আকার ধারণ করতে পারে।
অতএব, মহারাষ্ট্রের মুসলিমদের এই প্রতিবাদ শুধু ধর্মীয় সম্মানের জন্য নয়, বরং তাদের অধিকার ও নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই প্রতিবাদ মুসলিম সমাজের একতাবদ্ধতা ও অধিকার রক্ষার প্রতীক।